মালয়েশিয়ায় মানবপাচারের শিকার তিন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে পেতালিং জায়া জেলা পুলিশ সদর দফতর, সেলাঙ্গর ইমিগ্রেশন বিভাগ এবং পেতালিং জায়া সিটি কাউন্সিলের যৌথ অভিযানে এ উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে তিন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়, যাদের মানবপাচারের শিকার হয়ে সেখানে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছিল।
অভিযানে ২৯ জন বিদেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কারখানার মালিক ও পরিচালক হিসেবে পরিচয় দেওয়া দুই ব্যক্তিকে মূল দমন-পীড়নের পরিকল্পনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত দুইজনের মধ্যে একজন বাংলাদেশি (৪০ বছর বয়সী) এবং একজন ভারতীয় (৪৮ বছর বয়সী) নাগরিক। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, এ দুই ব্যক্তি মানবপাচার ও শ্রমিক শোষণের পুরো প্রক্রিয়ার প্রধান সংগঠক।
এই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের মানবপাচার ও অবৈধ অভিবাসন রোধ আইনের ১২ ধারা, ১৯৫৯/৬৩ সালের ইমিগ্রেশন আইনের ৩৯ (বি) ধারা এবং একই আইনের ৫৫ (বি) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ ও ইমিগ্রেশন বিভাগের যৌথ অভিযানে কারখানায় থাকা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও মিয়ানমারের বিভিন্ন কর্মচারীদেরও শনাক্ত করা হয়েছে। এদের বেশিরভাগই অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করে ওই কারখানায় কাজ করছিলেন।
অভিযানে গ্রেফতার ২৯ জনের মধ্যে কারখানার কর্মচারীদের পাশাপাশি দমন-পীড়ন চালানোর দায়ে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা চলছে। উদ্ধার হওয়া তিন বাংলাদেশি নিরাপদে রয়েছেন এবং তাদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
মালয়েশিয়ায় মানবপাচার ও অবৈধ অভিবাসন একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা। দেশটির কর্তৃপক্ষ এই সমস্যার সমাধানে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলেও, মানবপাচার চক্রের অবৈধ কার্যক্রম থামছে না। বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশ থেকে আসা শ্রমিকদের অনেকেই দালালদের প্রতারণার শিকার হয়ে চরম দুঃখজনক অবস্থার মধ্যে পড়ছেন।
এই অভিযান মানবপাচার রোধ এবং ভুক্তভোগী শ্রমিকদের উদ্ধার করার ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষের চলমান উদ্যোগের একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।