মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসী দমন অভিযান: আতঙ্কে প্রবাসীরা

মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চলছে, যা প্রবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিনিয়ত এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষ করে নথিবিহীন অভিবাসীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, যার ফলে প্রবাসীদের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের কঠোর নির্দেশনা হলো, যেকোনো অবস্থাতেই অবৈধ অভিবাসীদের থাকতে দেওয়া হবে না। বৈধ পাসপোর্ট, কাজের অনুমতিপত্র বা ভ্রমণ ভিসা ছাড়া অবস্থানরতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন সময়ে দেশের হটস্পটগুলোতে জনসাধারণের তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হচ্ছে
২৩ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার কুয়ালা তেরেঙ্গানুর হুলু তেরেঙ্গানু জেলায় একটি অভিযানে ৬টি নির্মাণ সাইটে "সুইপ অ্যান্ড গ্যাদার" নামক বিশেষ অভিযান চালানো হয়। টানা সাত ঘণ্টা ধরে চলা এই অভিযানে ২৪ থেকে ৫৪ বছর বয়সী মোট ৩৪ জন অভিবাসীকে আটক করা হয়।
রাজ্য ইমিগ্রেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ ইউসরি মোহাম্মদ নর জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ১২ জন বাংলাদেশি। বাকিদের মধ্যে একজন মিয়ানমারের এবং একজন পাকিস্তানের নাগরিক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ, বৈধ কাজের অনুমতি ছাড়া কাজ করা এবং অন্যান্য অভিযোগ আনা হয়েছে। পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য তাদের আজিল ইমিগ্রেশন ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়েছে। এর আগে,
২২ জানুয়ারি মালয়েশিয়ার অন্যতম ব্যস্ততম পর্যটন এলাকা বুকিত বিনতাং থেকে আরও বড় অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানে ৭১ জন বাংলাদেশিসহ মোট ১৭৬ জন অভিবাসীকে আটক করা হয়।
অভিযানের প্রভাব ও প্রবাসীদের আতঙ্ক
দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের এই কঠোর অবস্থানের ফলে নথিবিহীন প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক বিরাজ করছে। তারা দিনের বেলায় কাজের স্থানে যাওয়া বা বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিসহ অন্যান্য দেশের প্রবাসীদের মধ্যে এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ স্পষ্ট জানিয়েছে, যারা বৈধভাবে অবস্থান করছেন না, তাদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। বৈধ নথি ছাড়া কাজ করা, ভ্রমণ ভিসার অপব্যবহার বা অবৈধ উপায়ে দেশে প্রবেশের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত নথিবিহীন অভিবাসীরা গভীর সংকটে পড়েছেন। তাদের বৈধতা অর্জনের সুযোগ সীমিত, আর গ্রেফতার এড়াতে তারা নিরবচ্ছিন্ন আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন।