বেতন না পেয়ে ক্ষোভে ভাঙচুর, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকের ২৬ মাসের কারাদণ্ড

মালয়েশিয়ার ইয়ং পেং ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এক বাংলাদেশি শ্রমিককে তিনটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে ২৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। অভিযুক্ত ২৫ বছর বয়সী রফিক আদালতে দোভাষীর মাধ্যমে স্বীকার করেছেন যে, বেতন সংক্রান্ত বিরোধের জেরে তিনি এক ব্যক্তিকে আঘাত করেন ও ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে কর্মস্থলের চারা গাছ নষ্ট করেন।
অভিযুক্ত রফিক ও ভুক্তভোগীর মধ্যে মূলত বেতন পরিশোধ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। মালিক পক্ষ সময়মতো বেতন পরিশোধ না করায় এই বিরোধ চরমে পৌঁছায়। একপর্যায়ে ক্ষুব্ধ রফিক ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে পেছন থেকে আঘাত করেন এবং কর্মস্থলে চারা গাছের ক্ষতি করেন।
রফিকের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার ফৌজদারি দণ্ডবিধির তিনটি ধারায় অভিযোগ আনা হয়:
1. ৩২৩ ধারা ৭ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে ইয়ং পেং-লাবিস সড়কে ৩৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে ইচ্ছাকৃতভাবে মারধর করার অভিযোগে রফিককে অভিযুক্ত করা হয়। এই ধারায় সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় শাস্তির বিধান রয়েছে।
2. ৫০৬ ধারা মারধরের সময় রফিক ভুক্তভোগীকে ভয় দেখিয়ে হুমকি দেন, যা মালয়েশিয়ার আইনে একটি অপরাধ।
3. ৪২৭ ধারা ৮ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে রফিক তার কর্মস্থলে কোম্পানির মালিকানাধীন ২০টি চারা গাছ নষ্ট করেন, যার ফলে প্রতিষ্ঠানটির ৬ হাজার রিঙ্গিত ক্ষতি হয়। এই অপরাধের শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।
তদন্ত শেষে মামলাটি পরিচালনা করেন উপ-অভিযোজক ফারাহ ওয়াহিদাহ মোহাম্মদ শরীফ। তবে রফিকের পক্ষে কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। আদালতে দোষ স্বীকারের পর বিচারক আরুন নভাল দাস রফিককে তিনটি অভিযোগে মোট ২৬ মাসের কারাদণ্ড দেন।
৪২৭ ধারায় এক বছরের কারাদণ্ড,৩২৩ ধারায় আট মাসের কারাদণ্ড,৫০৬ ধারায় ছয় মাসের কারাদণ্ড,
এই শাস্তিগুলো একত্রে কার্যকর হবে, ফলে রফিককে মোট ২৬ মাস কারাগারে কাটাতে হবে।
এই রায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য একটি সতর্কবার্তা স্বরূপ, বিশেষ করে যারা বেতন সংক্রান্ত জটিলতার সম্মুখীন হন। মালয়েশিয়ার আইন কঠোর হওয়ায় যে কোনো ধরনের উত্তেজিত প্রতিক্রিয়া গুরুতর শাস্তির মুখোমুখি করতে পারে। শ্রমিকদের আইনি সহায়তা নেওয়া এবং সংযত থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যাতে তারা এমন পরিস্থিতি এড়াতে পারেন।